"অক্রোধী" (১)
"আমি অক্রোধী"—দেবদ্যুতি বন্দোপাধ্যায়
একটা ছোট্ট ছেলে। সে ছিল প্রচন্ড রাগী। তাই দেখে বাবা তাকে একটা পেরেকভর্তি ব্যাগ দিলেন, এবং বললেন, "যতোবার তুমি রেগে যাবে, ততোবার একটা করে পেরেক, আমাদের বাগানের কাঠের বেড়াতে লাগিয়ে আসবে। "
প্রথমদিনেই ছেলেটিকে বাগানে গিয়ে ৩৮-টি পেরেক 💅মারতে হ'লো। পরের কয়েক সপ্তাহে ছেলেটি তার রাগকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে।
তাই প্রতিদিন কাঠে নতুন পেরেকের সংখ্যাও ধীরে ধীরে কমতে থাকে। ছেলেটি বুঝতে পারলো, হাতুড়ি🔨 দিয়ে কাঠে পেরেক বসানোর চেয়ে তার রাগকে নিয়ন্ত্রণ করা অনেক বেশি সহজ।
শেষ পর্যন্ত সেই দিনটি এলো, যেদিন তাকে একটি পেরেক ও মারতে হলো না। সে তার বাবাকে এই কথা জানাতে, তার বাবা তাকে বললেন, " এখন তুমি যেসব দিনে তোমার রাগকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে, সেসব দিনে একটি একটি করে পেরেক খুলে ফেলবে। "
অনেক দিন চলে গেলো এবং
ছেলেটি একদিন তার বাবাকে জানালো যে, সব পেরেক ই সে খুলে ফেলতে সক্ষম হয়েছে।
তার বাবা এবার তাকে নিয়ে বাগানে গেলেন, এবং কাঠের বেড়াটি দেখিয়ে বললেন, " তুমি আমার কথা রেখেছো, এবং খুব ভালোভাবে তোমার কাজ করতে পেরেছো। এখন তুমি তোমার রাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারো। কিন্তু দ্যাখো, প্রতিটি কাঠে পেরেকের ⭕গর্তগুলো এখনও রয়ে গেছে। কাঠের বেড়াটি আর কখনও আগের অবস্থায় ফিরে যাবে না।
যখন তুমি কাউকে রেগে গিয়ে কিছু বলো, তখন তার মনে ঠিক এমন একটা আঁচড় পড়ে যায়। তাই নিজের রাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে শেখো। মানসিক ক্ষত অনেক সময় শারীরিক ক্ষ তের চেয়েও সাংঘাতিক ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। "
রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন। তাই " স্বত:অনুজ্ঞা "- র সূচনাতেই আমাদের অক্রোধী হবার অঙ্গীকার। পূজনীয় বাবাইদাদা বলেন, " রাগ মানে পরাজয়। কর্মে যুক্ত হ ও, রাগ চলে যাবে। কখনো রাগবে না। "
No comments