সত্যানুসরণ(SATYANUSARAN)


 সত্যানুসরণ (SATYANUSARAN)
সত্যানুসরণ গীতার ন্যায় এরূপ একটি গ্রন্থ যা সকল ধর্মের মানুষের নিত্যপঠনীয় হওয়া উচিত।
পরম প্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র গ্রন্থ রচনার উদ্দেশ্যে এই গ্রন্থটি রচনা করেন নি। শ্রীশ্রীঠাকুরের অন্যতম প্রিয় ভক্ত অতুলচন্দ্র ভট্টাচার্য্য ছিলেন শ্রীশ্রীঠাকুরের জন্মভূমি হিমায়েতপুর এর পার্শ্ববর্তী বাজিতপুর-ঘাট স্টীমার স্টেশনের স্টেশন মাস্টার। অবসর পেলেই তিনি শ্রীশ্রীঠাকুরের সঙ্গ করতেন এবং ব্যক্তিগত নানা সমস্যার বিষয়ে শ্রীশ্রীঠাকুরের পরামর্শ নিতেন। একসময় অতুলচন্দ্রের অন্যত্র বদলীর আদেশ এলে তিনি শ্রীশ্রীঠাকুরকে কিছু উপদেশ বাণী লিখে দিতে বলেন যার সাহায্যে তিনি বাধাহীনভাবে চলতে পারেন এবং শান্তি ও কল্যাণের অধিকারী হতে পারেন। অতুলচন্দ্র ভট্টাচার্যের সবিনয় অনুরোধে শ্রীশ্রীঠাকুর এক রাত্রিতে একাসনে একটি খাতায় উপদেশ লিখে দেন। ঘটনাটি ছিল বাংলা ১৩১৬ সালের এবং তখন শ্রীশ্রীঠাকুরের বয়স ছিল মাত্র ২২ বৎসর। পরবর্তীকালে অতুলচন্দ্র ভট্টাচার্যের কাছ থেকে খাতাটি পেয়ে “সত্যানুসরণ” নাম দিয়ে বাংলা ১৩২৫ সালে প্রথম সংস্করণ প্রকাশিত হয়। পরবর্তীকালে নতুন সংস্করণগুলোতে শ্রীশ্রীঠাকুরের আদেশে আরও অনেক বাণীর সংযোজন হয় গ্রন্থটিতে। 
অতুলচন্দ্র ভট্টাচার্য্য স্বশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণীয়; অতুলচন্দ্র ভট্টাচার্য্য’র আকুল প্রার্থনার দরুণ সর্বসাধারণ জীবনপথের পরম পাথেয় শ্রীশ্রীঠাকুরের অমৃত নিষ্যন্দী স্বতঃ উৎসারী বাণী পেয়েছে যা যুগ যুগ ধরে সঞ্জীবিত করে রাখবে প্রতিটি মানুষকে।  
সত্যানুসরণ ইংরেজি, হিন্দী, ওড়িয়া, অসমীয়া, বড়ো, নেপালি, মারাঠী, গুজরাটী, তেলেগু, ঠাড়, সাঁওতালী, মণিপুরী, খাসি, তামিল প্রভৃতি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। 

“সত্যানুসরণ” গ্রন্থ সম্পর্কিত একটি আলোচনা শ্রীদেবীপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের সংকলিত “দীপরক্ষী’’ গ্রন্থ থেকে হুবহু উল্লেখ করা হলো:

সত্যানুসরণ সম্বন্ধে কথা উঠল। 
শ্রীশ্রীঠাকুর---সত্যানুসরণ আমার হাতের লেখা। প্রথম বই। বই ব’লে তো লিখিছিলাম না। অতুল ভট্টাচার্য ক’ল, আপনার  normal experience (স্বাভাবিক রকমে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা) কী, কী, সেগুলি যদি লিখে দেন। 
শরৎদা---সত্যানুসরণ  তো অাপনার কুড়ি-বাইশ বছরে লেখা। ও বয়সে আপনার এমন কী  experience (অভিজ্ঞতা) হয়েছিল?
শ্রীশ্রীঠাকুর---আমার জীবনের তো একটা  angle (দৃষ্টিকোণ) ছিল, তা’ দিয়ে বিচার করে যা’ যা’ পাইছি, তাই লিখিছি। ছোটবেলায় আমি মা’র পাছে পাছে ঘুরতাম চক্রবৃদ্ধির মতো। ঐ সবের উপরে দাঁড়ায়েই যা’ হবার তা’ হইছে। ওই যে একটা পেলাম, Do unto others as you wish to be done by (অপরের প্রতি কর সেই আচরণ, নিজে যাহা পেতে তুমি কর আকিঞ্চন)। অনেকে আমারে মারত। তার থেকেও  অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতাম। আমার  education-এর (শিক্ষার) দিককার  seed (বীজই) হলো---ওই ‘এক আর এক দুই’ হয় কেমন ক’রে ? দু’টো এক হতে পারে না। এর মধ্যে ‍দিয়ে সংস্কৃত তো শিখতেই পারলাম না। আমার এইসব  experience (অভিজ্ঞতা) গুলিই একেবারে ন্যাংটা। 
[তারিখ: ইং ২৩-০১-১৯৬২] 


 © স্বত্ব আবির্ভাব


                                                                          

No comments

Powered by Blogger.